গ্রেপ্তার মো. রাশেদুল ইসলাম (৩০) রংপুর থেকে এসে গত ২ বছর ধরে আশুলিয়ার জিরানী বাজার কলেজ রোড এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রী এবং বিবাহিত। অপহরণকারীর স্ত্রী নুরজাহান ও অপহৃত শিশুটির মা মিরা আক্তার আশুলিয়ায় একই গামেন্টসে চাকরি করতেন। এর সুবাদে দুজনের মধ্যে সু-সম্পর্ক ছিল। এ ছাড়া অপরজন হলেন রাশেদুলের ফুফু রোকসানা। তিনিও রংপুরের বাসিন্দা এবং গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার রতনপুর এলাকায় ভাড়া থাকতেন।
অপহৃত শিশু টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী থানার পাইক্কা গ্রামের সাদ্দাম হোসেনের মেয়ে। সাদ্দাম হোসেন পেশায় রাজমিস্ত্রি ও তার স্ত্রী মিরা আক্তার পোশাককর্মী। তারা আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের টেঙ্গুরী এলাকায় জনৈক আলী হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকেন।
জানা যায়, গত ৩১ মার্চ (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০টার দিকে আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের টেঙ্গুরী এলাকা থেকে দেড় বছরের শিশু আঁখিকে অজ্ঞাত পরিচয়ে এক যুবক অপহরণ করে। ঘটনার কয়েকদিন আগে আলী হোসেনের বাড়িতে বাসা ভাড়া নিতে আসে অপহরণকারী। বাড়ির ম্যানেজার না থাকায় কথাবার্তা বলে চলে যায়। পরে গত ৩১ মার্চ আবার বাসা ভাড়া নিতে এসে খেলা করার সময় কৌশলে আঁখিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
পরদিন ভুক্তভোগী পরিবার আশুলিয়া থানায় শিশু অপহরণের মামলা করেন। এ ঘটনায় অপহৃত শিশুটিকে উদ্ধার ও অপহরণকারীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে র্যাব-৪। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৪ এর গোয়েন্দা তথ্যে গত ৩০ মে রংপুর শহরের বিভিন্ন স্থানে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে অপহরণকারী মো. রাশেদুল ইসলামকে (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে অপহরণকারীর দেওয়া তথ্যমতে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার রতনপুর এলাকার একটি বাসা হতে রোকসানার (৩৫) হেফাজত থেকে দেড় বছরের অপহৃত শিশু আঁখিকে উদ্ধার করা হয়।
র্যাব আরও জানায় রাশেদুল ইসলামের স্ত্রী ও অপহৃত আঁখির মা একই গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। রাশেদুলের স্ত্রী তার সাত বছরের সন্তানকে রেখে পরকিয়ার টানে পরপুরুষের সাথে চলে যায়। চাকরির সুবাদে রাশেদুলের স্ত্রী ও অপহৃতের মা মিরার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল। তাই রাশেদুলের সন্দেহ তার স্ত্রী কোথায় আছে তা জানে মিরা। এ কারণে মিরার কাছে তার স্ত্রীর সন্ধান চান। কিন্তু মিরা না জানায় বলতে পারেননি। তাই রাশেদুল মিরার সন্তানকে অপহরণ করে তার স্ত্রীর সন্ধান চান।
ঘটনার এক সপ্তাহ পর অপহরণকারী রাশেদ ভিকটিম শিশুটির পিতা-মাতাকে ফোন করে আঁখি তার হেফাজতে আছে জানিয়ে তার স্ত্রীর সঠিক ঠিকানা জানতে চান। ঠিকানা জানালে তার সন্তানকে ফেরত দেবেন বলে জানান। পরবর্তীতে অপহরণকারী লোভের বশবর্তী হয়ে অপহৃত ভিকটিম আঁখির বাবা-মার কাছে ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপন দাবি করলে বিকাশে ২০ হাজার টাকা পাঠান। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তার অবস্থান জেনে যাওয়ার ভয়ে আসামি রাশেদ মুক্তিপনের টাকা উত্তোলন না করে মোবাইল বন্ধ করে দেন।
সিপিসি-২, র্যাব ৪ এর কোম্পানি কমান্ডার এএসপি মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম সম্পন্ন করে শিশুটিকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। একইসঙ্গে আসামিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সোর্স: ঢাকা পোস্ট /মাহিদুল মাহিদ/আরআই